Travel lover sharing untold stories, hidden gems & real tips from Bangladesh and beyond. 🌍📷

আমার ফটো
Dhaka, Dhaka, Bangladesh
Welcome to Bangladesh Travel! Discover the beauty, culture, and hidden gems of Bangladesh like never before. Whether you’re a local explorer or a global traveler, this blog is your go-to guide for breathtaking destinations, authentic experiences, travel tips, and inspiring stories from every corner of this vibrant land. From the serene hills of Bandarban to the world’s longest beach in Cox’s Bazar — let’s uncover Bangladesh, one journey at a time. 🌍✈️

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

ঢাকা থেকে পারকির চর: একদিনের সাগরপারের স্বপ্নময় ভ্রমণ


 

ঢাকা থেকে পারকির চর


পারকির চর ভ্রমণ গাইড


চট্টগ্রাম সৈকত


পারকির চর কিভাবে যাবেন

 

পারকির চর সমুদ্র সৈকত

 

ভূমিকা: ঢাকা শহরের যান্ত্রিকতা থেকে সাগরবেলার টানে ঢাকার ব্যস্ত জীবন, কোলাহল ট্রাফিক জ্যামের মাঝে হঠাৎ যদি মনে হয় কিছু সময় প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে হবে, তাহলে পারকির চর হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ গন্তব্য। চট্টগ্রামের দক্ষিণে অবস্থিত এই মনোরম সমুদ্র সৈকতটি দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে। সমুদ্র, সূর্যাস্ত, ঝিনুকভরা বালুচর আর জেলেদের মাছ ধরাসব কিছু মিলিয়ে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে সেখানে।




 

 

পারকির চর কোথায়?

 

পারকির চর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত একটি ছোট উপকূলীয় এলাকা। এটি কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে। সৈকতের একদিকে সমুদ্র, অন্যদিকে নদীএমন এক দ্বৈত সৌন্দর্য খুব কম জায়গাতেই দেখা যায়।




 

ঢাকা থেকে পারকির চর কিভাবে যাবেন?

 

Step-by-Step ভ্রমণ গাইড


1. প্রথম ধাপ: ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যেকোনো বাস, ট্রেন বা বিমানে পৌঁছাতে হবে। বাসে যেতে সময় লাগে প্রায় - ঘণ্টা, ট্রেনে - ঘণ্টা এবং বিমানে মাত্র ঘণ্টা।

 

2. দ্বিতীয় ধাপ: চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছে আপনাকে আনোয়ারা উপজেলার দিকে রওনা দিতে হবে। আপনি চান্দগাঁও, পাঠানটুলী বা বহদ্দারহাট থেকে সিএনজি/মাইক্রোবাস বা লোকাল বাস ভাড়া করে যেতে পারেন।

 

 3. তৃতীয় ধাপ: আনোয়ারা থেকে ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে আপনি পৌঁছে যাবেন পারকির চরের সমুদ্র সৈকতে।





 

কেন যাবেন পারকির চরে?

 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:

 

পারকির চরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে তার নির্জন নির্মল প্রকৃতি। এখানে কৃত্রিম কোনো সাজসজ্জা নেই, বরং কেবল প্রকৃতির স্পর্শে গড়ে ওঠা এক অনিন্দ্য সৈকত। সূর্যোদয় সূর্যাস্তের দৃশ্য এখানে সত্যিই মনমুগ্ধকর।




 

 

মাছ ধরা নৌকা চলাচল:

 

সাগরের কিনারে বসে আপনি দেখতে পাবেন স্থানীয় জেলেরা নৌকা নিয়ে মাছ ধরছে। আপনি চাইলে নৌকায় করে কিছুটা গভীর পানিতে ঘুরেও আসতে পারেন।

 

 

ছবির মতো সুন্দর লোকেশন:




 

 

ফটোগ্রাফারদের জন্য এটি একটি স্বর্গ। বালুচর, লাল সূর্য, ঝিনুক, নৌকা আর দিগন্তজোড়া জলরাশিসব মিলে নিখুঁত ইনস্টাগ্রাম ফ্রেম!




 

নীরবতা প্রশান্তি:

 

 

কক্সবাজার বা কুয়াকাটার তুলনায় এখনো তুলনামূলক কম পর্যটক যান পারকির চরে। তাই এটি একান্ত সময় কাটাতে চমৎকার একটি জায়গা।




 

কেন পারকির চর দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে?

 

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনেকেই এই সৈকতের কথা জানতে পারছে। দিন দিন বাড়ছে পর্যটকের আনাগোনা। যেহেতু এটি তুলনামূলকভাবে কম খরচে ভ্রমণের সুযোগ করে দেয়, তাই তরুণ শিক্ষার্থী ভ্রমণকারীদের জন্য এটি আদর্শ।





 

 

ভ্রমণ পরামর্শ টিপস:

 

 • পানি শুকনো খাবার সাথে রাখুন, কারণ সৈকতের আশেপাশে এখনো পর্যাপ্ত হোটেল বা দোকান নেই।

 

সুর্যাস্তের আগে ফিরে আসার চেষ্টা করুন, কারণ সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত আলো বা নিরাপত্তা নেই।

 

সানস্ক্রিন, হ্যাট সানগ্লাস ব্যবহার করুন, সূর্যের তাপ থেকে বাঁচার জন্য।

 

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। প্লাস্টিক বা খাবারের প্যাকেট সৈকতে ফেলে না যাওয়াই শ্রেয়।

 

পারকির চর ঘুরে এসে অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

 

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ছিল চমৎকার। ঢাকার ধুলোময় শহর থেকে বের হয়ে যখন প্রথম ঢেউয়ের শব্দ কানে এল, মনে হচ্ছিল যেন প্রকৃতি নিজ হাতে লিখে দিয়েছে প্রশান্তির কবিতা। ঝিনুক কুড়ানো, বালুতে হেঁটে হেঁটে সূর্যাস্ত দেখা, আর নিরিবিলি পরিবেশসব মিলিয়ে মনে হয়েছে, আবারও ফিরে আসব।

 




 

শেষ কথা:

পারকির চর এখনো অবারিত, নিখুঁত প্রাকৃতিক এক সৈকত। ঢাকার অদূরে এমন একটা জায়গা যেখানে একদিনেই ঘুরে এসে মনটাকে তরতাজা করে ফেলা যায়। আপনি যদি সাগরের কোল ঘেঁষে একদিনের ট্রিপ চান, তাহলে নিঃসন্দেহে পারকির চর হতে পারে আপনার পরবর্তী ভ্রমণ তালিকার সেরা সংযোজন।

শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫

ঢাকা থেকে সিলেট ভ্রমণ | শ্রীমঙ্গল, জাফলং, তামাবিল ও লালাখাল ট্যুর গাইড

 ঢাকা থেকে সিলেট ভ্রমণ করুন! শ্রীমঙ্গল চা বাগান, জাফলং নদী, লালাখাল নীল জল ও তামাবিল সীমান্তের বিস্তারিত অভিজ্ঞতা জানুন এই ব্লগে।


বাংলাদেশের উত্তরের এক টুকরো স্বর্গ বলা হয় সিলেটকে। ঢাকার যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সিলেট হতে পারে আপনার পরবর্তী ভ্রমণের আদর্শ গন্তব্য। পাহাড়, ঝর্ণা, নদী আর অসাধারণ চা-বাগান মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করে এখানে। এই ব্লগে আমি শেয়ার করছি আমার ঢাকা থেকে সিলেট ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, যেখানে আমি ঘুরেছি শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, জাফলং, তামাবিল লালাখাল।

 ভ্রমণ শুরু: ঢাকা থেকে সিলেট

 


সফর শুরু করি ঢাকা থেকে বাসে করে। প্রায় ঘণ্টার যাত্রা শেষে ভোরে পৌঁছাই সিলেট শহরে। বাসে ভ্রমণ যদিও কিছুটা ক্লান্তিকর ছিল, কিন্তু সিলেট শহরে নামতেই পাহাড়ি বাতাস আর নির্মল প্রকৃতি সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। সিলেট শহরে হোটেল বুক করে প্রথমেই তৈরি হই শ্রীমঙ্গল ঘুরতে যাওয়ার জন্য।

 

শ্রীমঙ্গল: চায়ের রাজধানী

 


সিলেট থেকে প্রায় ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত শ্রীমঙ্গল। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদিত হয় এখানে, তাই একে বলা হয় দেশের চা-রাজধানী।

 


চা-বাগানের সবুজে ঘেরা পথ দিয়ে হাঁটা, বাগানের মাঝে বসে চা খাওয়াপ্রতিটি মুহূর্ত যেন ছবির মতো সুন্দর। 


শ্রীমঙ্গলে সাত রঙের চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা সত্যিই চমকপ্রদ। এক কাপ চায়ের মধ্যে সাতটি আলাদা স্তরে সাতটি ভিন্ন স্বাদের চা! এর স্বাদ আর বৈচিত্র্য এখনো মুখে লেগে আছে।

 


শ্রীমঙ্গলে ঘুরে দেখেছি লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কযেখানে বুনো হাতি, বানর, নানা প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যায়। গাইড নিয়ে আমরা বনের ভিতর ট্রেইলও করি। এরপর ঘুরে যাই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, যা দেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাতগুলোর একটি। পাহাড় বেয়ে জল পড়ার শব্দে প্রকৃতি যেন গান গায়।

 

 মৌলভীবাজার: ইতিহাস সংস্কৃতির শহর

 


শ্রীমঙ্গল থেকে মৌলভীবাজার খুব কাছেই। এটি একটি ঐতিহাসিক শহর, যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি রয়েছে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এখানকার রাস্তা, স্থানীয় বাজার, প্রাচীন মসজিদ আর হিন্দু মন্দিরের সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে।

 

স্থানীয়দের জীবনযাত্রা, তাদের অতিথিপরায়ণতা, আর সাদা চোখে জীবনকে দেখার যে সহজতা, তা সত্যিই অনন্য। মৌলভীবাজারে কিছু সময় কাটিয়ে আমরা পরদিন সকালেই যাত্রা করি আমাদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যজাফলংয়ের পথে।

 

 

জাফলং: স্বচ্ছ নদী পাথরের রাজ্য

 


সিলেট শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জাফলং, এক অদ্ভুত সুন্দর জায়গা। একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে স্বচ্ছ নীলাভ নদী, আর নদীর বুক জুড়ে হাজার হাজার পাথর। 


নদীর
ওপারে দেখা যায় ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়, যেখানে প্রায়ই মেঘ নেমে আসে নিচেযেন চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মেঘের পর্দা।

 


আমরা বোট ভাড়া করে নদীর বুকে ঘুরে বেড়াই। পাথরের মাঝে বসে পা ডুবিয়ে রাখার অভিজ্ঞতা এক কথায় অসাধারণ। ছবি তোলার জন্য এটি একদম আদর্শ জায়গা। 



নদীর জলে পাহাড় আর আকাশের প্রতিচ্ছবি এক অনন্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে।

 


 তামাবিল: সীমান্তে দাঁড়িয়ে একসাথে দুই দেশ দেখা

 


জাফলং থেকে মাত্র কিলোমিটার দূরে তামাবিল সীমান্ত। এখানে দাঁড়িয়ে একদিকে বাংলাদেশ, অন্যদিকে ভারতের মেঘালয়। সীমান্ত এলাকায় সীমানা প্রাচীর পতাকা দেখে গর্বে মন ভরে ওঠে। এই জায়গায় খুব সুন্দরভাবে দুই দেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। আমরা কিছু সময় কাটাই এখানে, ছবি তুলি, আর সেখানকার শান্ত পরিবেশ উপভোগ করি।

 


 লালাখাল: নীলাভ পানির জাদু

 


আমাদের ভ্রমণের সবচেয়ে মুগ্ধকর স্থান ছিল লালাখাল। নদীর পানি এতটাই স্বচ্ছ নীলাভ যে মনে হয় নীল কাঁচ দিয়ে বানানো হয়েছে। আমরা বোটে করে লালাখাল ঘুরে দেখি। দুপাশে সবুজ পাহাড়, মাঝে শান্ত নদীএমন দৃশ্য শহরে বসে কল্পনাও করা যায় না।

 


লালাখালের মূল আকর্ষণ হলো এখানকার পানি। বালির কারণে পানি এত পরিষ্কার দেখায়। এখানে বোট ride করার সময় প্রকৃতির সঙ্গে এক ধরনের আত্মিক সংযোগ অনুভব করি।

 


 ফেরার পথে মন ভরে যায়, মন খারাপও হয়

 


ভ্রমণ শেষে যখন আবার ঢাকা ফেরার সময় আসে, তখন এক ধরনের বিষণ্ণতা গ্রাস করে। সিলেটের প্রতিটি জায়গায় প্রকৃতি তার রূপ বিলিয়ে দিয়েছে মুক্তহস্তে। পাহাড়, নদী, বন আর মানুষের আতিথেয়তায় আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি।

 

ভ্রমণের টিপস:

               

ü  ভ্রমণের সেরা সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ, যখন আবহাওয়া ঠাণ্ডা আর মনোরম থাকে।

ü  বাস/ট্রেন: ঢাকা থেকে সিলেট যেতে রাতের বাস বা ট্রেন সুবিধাজনক।

ü  হোটেল বুকিং: আগেই অনলাইনে হোটেল বুক করে রাখুন, বিশেষ করে শীতকালে ভ্রমণের সময়।

ü  স্থানীয় খাবার: সিলেটের সাতকরা গোস্ত, চা বিভিন্ন পাহাড়ি খাবার ট্রাই করতে ভুলবেন না।

 

 শেষ কথা

 

ঢাকা থেকে সিলেটএক অসাধারণ ভ্রমণ অভিজ্ঞতা ছিল আমার জীবনে। যদি আপনি প্রকৃতিকে ভালোবাসেন, নতুন জায়গা ঘুরে দেখতে চান আর বাংলাদেশের সৌন্দর্য আবিষ্কার করতে চানতাহলে সিলেট হবে আপনার জন্য সেরা গন্তব্য।

 

আপনি সিলেট ঘুরে এসেছেন? নিচে কমেন্ট করে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

 

ফয়েজ লেক ভ্রমণ: চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিনোদনের সেরা জায়গা

  চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থিত ফয়েজ লেক ভ্রমণ করুন। নৌকা ভ্রমণ , অ্যামিউজমেন্ট পার্ক , ওয়াটার ওয়ার্ল্ড এবং রিসোর্টসহ উপ...